Skip to main content

আমি আর আমার ছাত্রী

এইতো ক'দিন আগের কথা। প্রাইভেট পড়াচ্ছিলাম এইচ এস সি
ফার্স্ট ইয়ারের একটি মেয়েকে। খুব চঞ্চল স্বভাবের মেয়েটি।
ঠাস ঠাস মনে যা আসে তাই বলে দেয়! কোনো ডর ভয় নেই। বাবা
মার আদর পেতে পেতে যা হয় আরকি। তবে একদিক দিয়ে
মেয়েটার প্রশংসা না করে পারি না... মেয়েটা অনেক বেশিই
ভালো স্টুডেন্ট। বেশিরভাগ বড়লোক মেধাবীদের কিছুটা
সামাজিক সমস্যা থাকে (সবার না)। মানে কোথায় কি বলতে
হয় এসবের মাপঝোকে অনেকে একটু কম কম বুঝে।
হুট করে সেদিন আমাকে প্রশ্ন করে ফেললো স্যার আপনার এই
নীল শার্ট ছাড়া আর কোনো শার্ট নেই?
আমার মুখটা সেদিন সত্যিই শুকিয়ে গিয়েছিলো। সাংঘাতিক
লজ্জার ব্যাপার। অন্যকিছু না হয় মেনে নেওয়া যায় কিন্তু
পোশাক আশাক বাহ্যিক চেহারা এসব নিয়ে কেউ কিছু খোটা
দিয়ে বললে কারোরি সহজে সেটা সহ্য হয় না। আমি কিছুটা
অবাক হয়ে নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম..
--- কে বললো নেই?
--- না মানে আপনাকে এই দুই মাসে এককালারের নীল শার্ট
ছাড়া অন্যকোনো ড্রেসে কখনো দেখিনি তো তাই। অন্য
আরেকটা পড়ে আসেন সেটাওতো নীল!
আমি কিছুটা অপ্রস্তুত ছিলাম.. জামাকাপড় নিয়ে এভাবে
কাউকে উত্তর দিতে হবে আগে বুঝিনি,, কিছুটা শান্ত ভাবে
তাকে বললাম...
--- আসলে আমি একটা পার্টটাইম জব করি.. তাই অফিস থেকে
সরাসরি এখানে চলে আসি। আমাদের অফিসের ড্রেসকোড
আছেতো.. সেখানে এক কালারের পরে আসতে হয়। তাছাড়া
নীল রঙ টা আমার অনেক ফেভারিট।
--- ওও... আচ্ছা। আপনার অফিস কোথায়? স্যার আপনি কতটাকা
বেতন পান?
আমি এবার সত্যিই খানিকটা রেগে গেলাম..
"কেন? আমার অফিস বেতন জেনে কি করবে তুমি?"
খানিকটা নিচুসরে উত্তর দিলো..
--- না.. কিছু না। এমনি।
.
ইদানিং মেয়েটা পড়ার বাইরে বেশি মাত্রায় কথা বলে
ফেলে। বেশির ভাগ কথাগুলো থাকে আমাকে নিয়ে। সেদিন
আর বেশিক্ষণ প্রাইভেট পড়াইনি। নিজেকে অনেক ছোট ছোট
লাগছিলো। এদিকে মেয়েটাকে রাগ দেখানোর কোনো ইচ্ছেই
আমার নেই.. কারন জানি ও যেটা খেয়াল করেছে সত্যটাই
বলেছে, এসব অন্য দেরো হয়তোবা চোখে পড়ে.. কিন্তু তারা
এভাবে হয়তো খেয়াল করে না অথবা সরাসরি বলার সাহস রাখে
না। আজ মেয়েটা আমার নিজের অবস্থানটাকে আরো একবার
মনে করিয়ে দিলো। তবে এমনিতে মেয়েটা সত্যিই অনেক
ভালো।
মেয়েটার নাম ইরিন। সে ঢাকার নামিদামী একটা কলেজের
সবজান্তা টাইপের স্টুডেন্ট! তাই ওকে পড়াতে খুব একটা কষ্ট
করতে হয় না। সপ্তাহে চারদিন ইংলিশ আর গণিত পড়াই...
মাশাআল্লাহ্.. একবার বুঝিয়ে দেয়ার পর পরেরবার আর বলে
দিতে হয় না। তবে মেয়ের মা অসম্ভব রকমের রাগি এবং
নেগেটিভ চিন্তাধারার মহিলা! সে মনে করে তার মেয়ে একটা
গাধা ছাত্রী... সব কিছুতেই তার মনে খুতখুতে! মেয়ে ভালো
রেজাল্ট করলেও কেন সে কম মার্কস পেয়ে ভালো রেজাল্ট
করলো এই নিয়ে আফসোসের শেষ নেই! যেদিন আমাকে টিউটর
হিসেবে রাখে.. সেদিন উনার কাছে আমাকে বিশাল একটা
ইন্টারভিউ দিতে হয়েছে! মুখের উপর উনি আমাকে প্রশ্ন
করেছিলো... "তুমি কি সত্যিই ঢাকা ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট?
দেখেতো মনে হয়না! আইডি কার্ড সাথে আছে?..আসল নাকি
নকল!!" আমিও মুখে সুন্দর করে ফটর ফটর ইংলিশে কয়টা লাইন
মেরে দিয়ে আইডিটা বের করে দেখালাম। অতপর নিজেকে
ভালো স্টুডেন্ট প্রমাণ দিতে পেরে টিউশনিটা হাতে পেয়ে
গেলাম।
তবে ইরিনের বাবাটা একদম বিপরীত স্বভাবের.. এক ঝলক হাসি
সবসময় তার মুখে লেগেই থাকে। অনেক শান্ত নম্র ভদ্র স্বভাবের
লোকটা। সমাজের কাছেও অনেক সম্মানীত ব্যক্তি। এককথায়
ইরিনের ফ্যামিলিটা নেগেটিভ পজিটিভ এর একটা জটিল
সংমিশ্রণ!
.
দিনটা ছিলো ১৬ ডিসেম্বর... টিউশনিগুলো সব ছুটি। তাই
বাড়তি ইনকামের আশায় দেরি না করে ভোর বেলাতেই
সিএনজি নিয়ে বের হয়েগেলাম। আসলে আমার তথাকথিত
পার্টটাইম চাকুরীটা কিন্তু অন্য কিছু না.... আমি একজন নীল
রঙা শার্ট পরিধেয় পার্টটাইম সিএনজি চালক! নিজের সম্মান
আর টিউশনি গুলো ধরে রাখতে মাঝে মাঝে মিথ্যে বলতে হয়...
কেউ সহজে চাইবেনা একটা সিএনজি চালক তার সন্তানের
টিচার হোক।
.
কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল বেলা... বাইরের পরিবেশটাও ঝকঝকে
পরিষ্কার... প্রাণবন্ত লাল সবুজের পতাকায় পুরো শহরটা ছেয়ে
আছে চারিদিক...সবার মাঝেই বিজয়ের উল্লাস ... নিজেরো
অনেক ভালো লাগছে.. শ্রদ্ধা জানাতে আমিও প্রতিবারের মত
ছুটে গিয়েছিলাম শহীদদের স্মৃতিফলকে। আমি দেশ বিজয়ের
আনন্দটা একটু গভীর থেকে অনুভব করতে জানি। কেননা..আমিও
যে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান!
.
আমার পেছন থেকে এক ভদ্রলোক ডাক দিয়ে বললো ধানমন্ডি
যাবা নাকি? প্যাছেনজারের এমন ডাক শোনার মাঝে অন্যরকম
একটা আনন্দ খুজে পাওয়া যায়.. এমন ডাক গুলোতে কিছু টাকার
গন্ধ মিশে থাকে! কিন্তু আজ আনন্দ নিয়ে পেছন ফিরে
তাকাতেই সব আনন্দ মাটি হয়ে যায়। দেখি শওকত তালুকদার
সাহেব দাঁড়িয়ে...! মানে উনি ইরিনের বাবা!! উনার পাশেই তার
একমাত্র কন্যা মানে আমার ছাত্রী ইরিন..! আর তার মা
রাগান্বিত মুডে দাঁড়িয়ে আছেন!!
পুরো পরিবেশটাই কিছুক্ষণের জন্য থমথমে হয়ে যায়। কি দিয়ে
কি বলবো জানা ছিলোনা। ইরিনের বাবার গলায় ছিলো
থোকায় থোকায় ফুলের মালা। কারন উনি একজন সম্মানিত
মুক্তিযোদ্ধা। আজ উনি নেতা কর্মীদের থেকে অনেক সম্মানে
সম্মানিত হয়েছেন। তিনি এগিয়ে এসে আমার দিকে তাকিয়ে
অস্পষ্ট ভাবে বললেন... "তু মি... এখানে!?" সাথে সাথে উনার
স্ত্রী এগিয়ে এসে তাকে বললেন দেখছো ইরিনের বাবা
দেখছো?! এই হলো তার 'ঢাকা ইউনিভার্সিটি!' তোমাকে আগেই
বলছিলাম একটু খোজ নেও ভালো করে। এদিকে ইরিন চুপচাপ
দাঁড়িয়ে আছে.. তার চোখে পানি টলমল করছে... আমি আর
ইরিনের দিকে তাকানোর সাহস পাইনি।
ইরেনের বাবা একজন সম্মানিত ব্যক্তি.. তাকে রাস্তায় এভাবে
দাঁড়িয়ে আমার সাথে কথা বলতে দেখে তাকে সম্মান করা
নেতা কর্মিরা এগিয়ে এসে জড়ো হয়ে যায়...। কর্মীদের সবার
ভাব গুলো দেখে মনে হচ্ছিলো এইবুঝি সবাই আমার উপর
ঝাঁপিয়ে পড়বে। ইরিনদের গাড়ি রাস্তার পাশে পড়ে আছে...
সম্ভবত নষ্ট হয়েছে.. তাই তিনি সি এন জি নিতে এসেছিলেন।
ইরিনের বাবা আমার কাধে হাত রেখে শান্ত ভাবে ভারী গলায়
বললেন.. আমাদের সাথে মিথ্যে বলেছো কেন??
আমি বুকে সাহস নিয়ে আস্তে আস্তে তার উত্তর গুলো দিতে
লাগলাম.........
.
--- স্যার আমি কোনো মিথ্যে বলিনি। ভার্সিটির পড়াশুনা আর
দু'একটা টিউশনির পাশাপাশি আমি পার্টটাইম কাজ করি। আর
সেটা হচ্ছে এই "সি এন জি"। টাকার প্রয়োজনে অনেককিছু
করতে হয়... আমার আব্বা মুক্তিযুদ্ধে তার পা দুটি হারিয়েছেন..
অভাবের সংসার আমাদের। একটু বড় হওয়ার পর সংসারের
আয়রোজগার আমাকেই করতে হতো। আমি যখন কলেজে পড়ি..
আমি শিক্ষিত হয়ে প্রথম প্রথম এই কাজ করতে চাইনি কিন্তু..
আমার আব্বা বলেন.. "কিরে বেটা এতে লজ্জার কি আছে? তুই
কি নিজ বাসায় কাজ করতে কখনো লজ্জা পাস? নিজ বাসায়
লুঙ্গি পড়ে থাকলে কারো সামনে লজ্জা পাস?? আমি
বলেছিলাম নাতো আব্বা নিজের বাসায় কেউ কি লজ্জা পায়
নাকি! আব্বা তখন হেসে বললেন আরে বেটা.. এইদেশটা তো
নিজের ই.. নিজের স্বাধীন মাটিতে স্বাধীনভাবে কাজ করবি
এতে আবার কিসের লজ্জা!? দেশটা তো তোদের জন্যেই আমরা
স্বাধীন করছি।
সেদিন আব্বার এই কথা শুনে মনে অনেক শক্তি পাই... কে কি
বললো পেছন ফিরে আর তাকাইনি.. ঠিকিতো বলেছেন.. আমার
দেশেতে আমি যা খুশি তাই কাজ করবো এতে কিসের এতো
লজ্জা!.....তারপর সেই কলেজ থেকে লেগে পড়ি পড়াশুনার
পাশাপাশি সি এন জি নিয়ে... সেইদিন এই কাজ না করলে
আমি আজ আমার পড়াশুনাটা এগিয়ে নিতে পারতাম না.. ঢাকা
ভার্সিটিতেও আর পড়া হতো না। আগে রিগুলার চালাতাম..
এখন পার্টটাইম চালাই.. আর একটা বছর পর পড়াটা শেষ হলে
হয়তো এই কাজটা আমাকে আর করতে হবে না।
.
আমার কথা গুলো চুপচাপ শুনছিলো সবাই। পুরনো ক্ষত গুলো মনে
পড়ে গড়গড় করে আমার চোখ বেয়ে পানি পড়ছিলো। কেউ একজন
কাছে এসে আমার চোখের পানি মুছে দিলো... উনি ছিলেন
ইরিনের মা!
ইরিনের বাবা আমার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলেন কি নাম
তোমার এই মহান বাবার?
অনেক গর্বের সাথে সেদিন উত্তর দিয়েছিলাম.. মোঃ
জাহাঙ্গীর হোসেন। নামটা শুনে তিনি আমার চেহারার দিকে
তাকিয়ে কিছু একটা মেলানোর চেষ্টা করলেন... ক্ষণিক চুপ
থেকে বললেন.. জাহাঙ্গীর মাস্টার!???
আমি তাজ্জব বনে গেলাম... আমার বাবার পুরনো পেশা তার
মুখে শুনতে পেয়ে... উনি জানেন কিভাবে! আমি অবাক হয়ে
মাথা নাড়ালাম।
তিনি পাথরের মত শক্ত হয়ে গেলেন। চোখে হাজারটা প্রশ্ন
নিয়ে মরিয়া হয়ে আমাকে জিজ্ঞাস করতে লাগলেন কোথায়
উনি??? দেশ স্বাধীনের পর কই ছিলেন উনি??? তুমি বাসার
ঠিকানা বলো এখনি...... এই বলেই.. সাইফুল সাইফুল... বলে তার
ড্রাইভারকে ডেকে বললেন গাড়ি ঠিক হয়নাই এখনো? রেডি
করো তাড়াতাড়ি।
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলাম। তিনি আবার প্রশ্ন করতেই আমি
হাউমাউ করে কেঁদে ফেলি.. আর বলি উনি নাই আর.. মাত্র ছয়
মাস আগেই তিনি চলে গেছেন দুনিয়া ছেড়ে। একথা শুনে তিনি
হতাশ হয়ে নিজের মাথা আর কপালে হাত বুলাতে থাকেন..
চোখটা বন্ধকরে দাঁড়িয়ে থাকেন... ইরিনের মা কানের কাছে
আস্তে করে জিজ্ঞাস করে.. "তুমি যে জাহাঙ্গীর ভাইয়ের
কথা বলতা উনি কি সেই জাহাঙ্গীর?"
তিনি মাথা নেড়ে হুম.. বলে চোখ খুললেন। একটুর জন্য তিনি
মানুষটার দেখা পেলেন না। তার মর্মান্তিক জীবন যাপনের
কথা শুনে.. তিনি ক্ষোভে লজ্জায়... নিজের গলা থেকে ফুলের
মালা গুলো নামিয়ে ফেললেন। ফুল গুলো কর্মীদের কাছে নিয়ে
বললেন... এই সম্মান শ্রদ্ধা আমার আর দরকার নেই। যে
জাহাঙ্গীর ভাইয়ের কথা আমি একটু আগে বললাম... উনি
ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে আমাদের এলাকার গ্রুপের কমান্ডার... তার
হাত ধরেই আমরা যুদ্ধ করেছি... তার দেখানো সাহসেই আমরা
যুদ্ধ করে যাওয়ার শক্তি পেয়েছি।
আর সেই ব্যক্তি দুই পা বিহীন অবস্থায় স্বাধীনতার ৪৪ বছর
পেরিয়েও যিনি তার প্রাপ্য সম্মান পাননি... অভাবী অবস্থায়
দুনিয়া ছেড়েছেন... আমার পক্ষে ভাই আর কোনো সম্মান
শ্রদ্ধা নেওয়াটা সম্ভব না... ক্ষমা করবেন আমাকে.... আমি
পারি নাই এমন একজন মুক্তিযোদ্ধার পাশে গিয়ে দাঁড়াতে..
আমি পারি নাই... এসব বলতে বলতে তিনি তার চোখ মুছতে
থাকেন। ফুল গুলো তাদের ফেরত দিয়ে গাড়িতে উঠে
পরেন...পরিবার নিয়ে দ্রুত সেই স্থান ত্যাগ করেন।
.
আমার সেদিন শুধু চিৎকার করে আব্বাকে বলতে ইচ্ছা
করছিলো... কেন চলে গেলে তুমি? কেন আজকের এই সম্মানটা
ভাগ্যে মিললোনা তোমার? কেন আজকের এই দিনটা দেখতে
পেলেনা তুমি?!
.
এমন অনেক সাহসী মুক্তিযোদ্ধারা মিলে দেশকে শত্রু মুক্ত
করেছেন
কিন্তু কিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা যোদ্ধারা নিজের দুর্ভাগ্য
গুলোকে মুক্ত করতে পারেননি।
.
দুদিন পর ইরিনীর মা ফোন করে আমাকে। জানিয়ে দেয় ইরিনীর
পরিক্ষা সামনে.. আমি যেন ঠিক টাইমে পড়াতে চলে আসি।
কিন্তু সব কিছু মিলিয়ে ইরিনের সামনে যেতে অনেক আনিজি
লাগছিলো।
পরেরদিন প্রাইভেট পড়াতে চলে আসি। ইরিন আমার সামনে
বসে আছে। ওর মুখে কোনো বারতি কথা নেই... পড়া শেষে
বিদায়ের বেলায় দরজার কাছে এসে ফিসফিস করে বলে
উঠলো.. এই যে শুনেন..... আজকে অন্য কালারের শার্ট পরে
আসছেন কেন?? এর পর থেকে নীল কালারের শার্ট টা পড়ে
আসবেন.. বুঝলেন.. এটা আমার প্রাইভেটের ড্রেসকোড! মনে
থাকবেতো?
আমি একটু মুচকি হেসে উত্তর দেই 'হুম'
.
এভাবে দিনকে দিন.. আস্তে আস্তে এই পরিবারের সবার সাথে
আমি অনেকটাই ফ্রি হয়ে গিয়েছি... আগে যেমন টা ভাবতাম
এরা বড়লোক বলে স্ট্যাটাস এর বড়াই করে..কিন্তু সেই ধারনাটা
আস্তে আস্তে সম্পূর্ণ পালটে যায়।
বিশেষ কোনো দিনে... আন্টি বিশেষ কোনো খাবার রান্না
করলে সেই খাবার না খেয়ে যাওয়ার কোনো উপায় থাকেনা।
জোর করে টেবিলে বসিয়ে দেয়।
এদিকে আংকেল হাতে সময় পেলেই ধরে বেন্ধে আমার সাথে
প্রায়ই খোশগল্পে মেতে উঠেন... তার এই সেই নানা পুরোনো
ইতিহাশ বর্ণনা দিয়ে যান। (মাঝে মাঝে একটু একটু বোরিং
লাগে)
.
ইরিনের কথা আর কি বলবো..... চলছে প্রাইভেট পূর্ণ গতিতে...
সাথে তার উদ্ভট উদ্ভট প্রশ্ন গুলোতো আছেই! তবে দিনকে দিন
তার নানা ধরনের বায়না তৈরি হচ্ছে। এখন আবার এটা সেটা
নিয়ে থ্রেড ও দেয়া শিখে ফেলেছে! আমি নিজেও এখন এক
দেড় ঘন্টার প্রাইভেট মনের ভুলে দুই তিন ঘন্টা পড়িয়ে ফেলি!!
(সামনে পরীক্ষাতো তাই একটু বেশি বেশি পড়ানো ভালো)
.

Comments

Popular posts from this blog

ভালবাসার সঙ্গা:-

ভালোবাসার সংজ্ঞা দিয়েছেন বিভিন্ন দার্শনিক বিভিন্ন ভাবে । ব্যক্তি ভেদে এই সংজ্ঞা বদলে যায় , যেমন বিখ্যাত গণিতবিদ পীথাগোরাস কে আমরা সবাই কম-বেশি চিনি। একবার কোন এক “ ভালোবাসা দিবস” এ এক লোক পীথাগোরাস কে জিজ্ঞেশ করেছিল, আপনার কাছে ভালবাসা’র সংজ্ঞা কী হতে পারে? পীথাগোরাস কোনো কথা না বলে খাতা-কলম নিয়ে বসে পরলো। তারপর কিছুক্ষন পর বলল, আমার কাছে ভালবাসা হচ্ছে ২২০ এবং ২৮৪ এর উৎপাদক ।তখন লোকটি বলল , কীভাবে? পীথাগোরাস বলল , ২২০ এর উৎপাদক হলো ১,২,৪,৫,১০,১১,২০,২২,৪৪,৫৫,১১০ এবং ২৮৪ এর উৎপাদক হলো ১,২,৪,৭১,১৪২ এখন আপনি যদি ২২০ এর উৎপাদক গুলোকে যোগ করেন তাহলে যোগফল হবে ২৮৪ (১+২+৪+৫+১০+১১+২০+২২+৪৪+৫৫+১১০=২৮৪) এবং ২৮৪ এর উৎপাদক গুলোকে যোগ করেন তাহলে যোগফল হবে ২২০ (১+২+৪+৭১+১৪২=২২০) কী! মজার না? আবার দেখুন আমাদের দেশের কবি রফিক আজাদের একটা কবিতা আছে, "ভালোবাসার সংজ্ঞা" ভালোবাসা মানে দুজনের পাগলামি, পরস্পরকে হৃদয়ের কাছে টানা; ভালোবাসা মানে জীবনের ঝুঁকি নেয়া, বিরহ-বালুতে খালিপায়ে হাঁটাহাঁটি; ভালোবাসা মানে একে অপরের প্রতি খুব করে ঝুঁকে থাকা; ভালোবাসা মানে ব্যাপক বৃষ্টি, বৃষ্

আমি নিজের চোখকে বিস্বাস করাতে পারছিলামনা।

আমি নিজের চোখকে বিস্বাস করাতে পারছিলামনা। - রাইসাঃ কি তুমার বিস্বাস হচ্ছেনা,আমি তুমার সামনে?? - আমিঃ তুমাকে কি আমি স্পর্শ করে দেখতে পারি? - রাইসাঃ আমি কি তুমাকে নিষেদ করেছি! - আমি আমার হাতটা রাইসার হাতের উপরে রাখলাম,আমার ভিতরে অজানা একটা ভাল লাগা কাজ করলো,বুকের ভিতরটা মোচর দিয়ে উঠলো! - এরি নাম হয়তো ভালবাসা! - আমি শুধু মুগ্ধ হয়ে রাইসাকে দেখছি।। - কখন যে সময় পেরিয়ে গেলো বুঝতে পারলাম না।।।হঠাৎ রাইসার ডাকে আমার হুশ্ ফিরলো! - রাইসাঃএখন আমাকে যেতে হবে শাকিল। - আমিঃ কেন?আরেকটু থাকোনা! - রাইসাঃ না একটু পরে আযান হবে,আমি আর থাকতে পারবনা, দিনের আলো আমি একদম সহ্য করতে পারিনা।আমি যাচ্ছি ভাল থেকো। রাইসা চলে গেলো। - ঘরটা আগের মতো আবার অন্ধকার হয়ে গেলো।শুধু একটা মিষ্টি গন্ধ পাচ্ছি! - - তার পর বেশ কিছুদিন কেঁটে গেলো,রাইসা আমাকে কল করছে না,দেখা করতেও আসছেনা।। - ভাবলাম ও হয়তো আমাকে ভুলে গেছে! মনের অজান্তেই কখন রাইসাকে আমি ভালবেসে ফেলেছি,জানিনা। - খুব কষ্ট হচ্ছিলো! রাইসাকে ছাড়া আর কোন কিছু ভাবতে পারছিনা আমি। হোক না সে অন্য কোন জাতি!আমি তু তাকে ভালবাসি আর ভালবাসা
ছেলেরা মাসে ৭০০০ টাকা বেতনে চাকরী করে!বাবার জন্য ১০০০,!মা'র জন্য ১০০০,!বউয়ের জন্য ১০০০ টাকা!ফেমিলি চালানোর ২০০০ বিকাশ করেও! দিব্যি ২০০০ টাকায় মাস চালিয়ে নিতেজানে। মাসে ৭০০০ টাকা মাইনের ছেলেটা বেতন পেয়ে! বউয়ের কাছে ফোনে বলতে জানে " ওগো তোমার জন্য কিপাঠাবো? " সামান্য বেতন পাওয়া যে ছেলেটা নিজের পুরনোজুতো বদলাবে বলে ঠিক করেছে , সেই ছেলেটাইমার্কেটে গিয়ে বউ আর বাবুর জন্য জুতো কিনে নিজের ছেঁড়াজুতো সেলাই করেমাসের পর মাস পড়তেজানে। উপোস পেটে কাজে গিয়েও মাকে বলতে জানে'আমি মাছ দিয়ে ভাত খেয়েছি তোমরা খেয়েছোতো', ১০৩ ডিগ্রী জ্বর নিয়ে কাজে গিয়েও বাবাকে বলে 'আমি অনেক ভাল আছি তোমরা ভাল আছোতো? নিজের পকেট ফাঁকা জেনেও বউকে বলে ' একটু ধৈর্য্য ধরো সামনের মাসে তোমার জন্য একজোড়া বালা কিনেদিব।