Skip to main content

বিয়ের গল্প

সাদিয়া এই প্রথম তামিমের দিকে তাকালো। তাকিয়ে আর
চোখ ফেরাতে পারলো না! কারণ তার কল্পনা শক্তির সঙ্গে
মিলে গেছে তামিমের চেহারা! এই ছেলেকে তরুণ বলা চলে,
যুবক নয়। সাদিয়ার ক্লাসমেট বললেও বিশ্বাসযোগ্য। . তামিম
আবার হাসছে! সাদিয়ার রাগ উঠে গেল! এই ছেলের কি হাসির
রোগ আছে নাকি! তবে হাসিটা সুন্দর। . তামিম বলল, " তুমি
আবার রেগে যাচ্ছো কেন? " . সাদিয়ার নিরবতায় তামিম
আবার বলল, " ঠিক আছে আর হাসবো না। তোমাকে কিছু প্রশ্ন
জিজ্ঞেস করি? " . সাদিয়া মাথা নাড়লো। তামিম বলল, "
তোমার সবচেয়ে ভালো লাগে কি করতে? " . সাদিয়া এবার
অবাক হলো। সে এই প্রশ্ন আসা করেনি। তার সংকোচ কেটে
গেছে, তাই সে এখন তামিমের দিকে তাকিয়ে আছে। . " বাঁশির
শব্দ শুনতে আমার ভালো লাগে। " - আস্তেধীরে বলল সাদিয়া। .
তামিম আবার প্রশ্ন করলো, " তোমার প্রিয় খাবার কি? " . -
মোরগ পোলাও। -- তুমি কি রাঁধতে পারো? - হু পারি। . -- ঠিক
আছে। আমার কথা শেষ। এখন আসি? - আমি কিছু জিজ্ঞেস
করতে পারি? (ইকটু ভেবে সাদিয়া প্রশ্ন করলো।) -- অবশ্যই,
বলো। . - আপনি কি করেন? -- ব্যাংকে চাকরি করি। - আপনি
কি পর্যন্ত পড়েছেন? -- অনার্স পাশ করেছি। . - একটা
পার্সোনাল প্রশ্ন করবো? -- হ্যাঁ করো। - আপনার বয়স তো
অনেক কম! এত কম বয়সে আপনাকে বিয়ে দিতে চাইছে কেন? .
অল্প করে হাসলো তামিম। তারপর বলল, . - আমার বয়স ততটা কম
নয়। তোমার চেয়ে ৫ বছরের বড় হবো। -- আমার প্রশ্নের উত্তর
পাইনি। - আসলে আমার আড্ডাবাজীর অভ্যাস আছে। অফিস
ছুটি হয় ৫ টায়, কিন্তু আমি বাসায় ফিরি ১০ টায়। বাসার সবার
ধারণা বিয়ে দিয়ে দিলে আমার আড্ডাবাজী বন্ধ হয়ে যাবে।
-- আপনার কি ধারণা? বিয়ের পরে আড্ডাবাজী বন্ধ হবে? . -
যদি তুমি আমার বউ হও তাহলে অবশ্যই বন্ধ হবে। . সাদিয়া এবার
লজ্জা পেয়ে গেল। মাথা নিচু করে রইলো। তামিম বলল, " আমি
তাহলে আসি। " . সাদিয়া হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লো। তামিম গেট
পর্যন্ত গিয়ে আবার ফিরে আসলো। পকেট থেকে একটি খাম
বের করে বলল, এটা রাখো। . সাদিয়া হাত বাড়িয়ে খামটি
নিলো। তামিম চলে গেল। . (চার) . তামিম রুম থেকে বের হওয়ার
সাথে সাথেই দুই ভাবী রুমে ঢুকলো। বড় ভাবী সাদিয়ার হাত
থেকে খাম নিয়ে নিলো। খুলে দেখলো সেখানে পাঁচ হাজার
টাকা! . দুজন ভাবীই তব্দা লেগে গেল। সাদিয়াও কম অবাক
হয়নি! মেয়ে দেখতে এসে এত টাকা কেউ দেয় নাকি! তার এক
বান্ধবীকে দেখতে এসে এক হাজার টাকা দিয়েছিলো, আর
আরেক বান্ধবীকে দিয়েছিলো ৫' শ টাকা। . বড় ভাবী বললেন, "
কিরে ছেলে পছন্দ হয়েছে? " . - হু। -- ছেলেটি কিন্তু রসিক। -
তোমরা কিভাবে জানলে? -- আমরা সবই শুনেছি। . - বলো কি!
-- হ্যাঁ। ছেলেটা কিন্তু ভালোই। - হু। আমার ক্ষুধা লেগেছে
ভাবী। . আসলে সাদিয়ার ক্ষুধা লাগেনি। এই দুজনের হাত
থেকে বাঁচার জন্যেই সাদিয়া মিথ্যে বলেছে। . রাতে খবর
আসলো যে, সাদিয়াকে তামিমের পরিবার পছন্দ করেছে। তারা
রাজি থাকলে সামনের মাসেই বিয়ে হবে। . রাতে সাদিয়ার
বাবা সাদিয়াকে জিজ্ঞেস করলো, " মা তুই কি রাজি আছিস?
" . রাজি না হওয়ার প্রশ্নই আসেনা। সাদিয়া অবশ্যই রাজি। .
(পাঁচ) . তামিম এর সাথে দেখা হওয়ার আগে সাদিয়া ছিলো
কল্পনার জগতে। আর এখন সাদিয়া প্রবেশ করেছে ভাবনার
জগতে। সে শুধু ভাবছেই আর ভাবছেই। . তামিম তাকে দেখতে
এসেই ৫ হাজার টাকা দিলো! এর মানে ছেলেটি খরুচে। আর
ছেলেটি রসিকতা করতে পছন্দ করে, এটা কোন সমস্যাই না। .
সাদিয়া সারাদিন ভাবে তাই অন্যমনস্ক থাকে। এটি নিয়ে দুই
ভাবী হাসাহাসি করে। সাদিয়ার রাগ উঠে। তাই এ দুজনের কাছ
থেকে সাদিয়া দূরে দূরে থাকে। . সপ্তাহখানেক বাদেই বড়
ভাবী এসে সাদিয়াকে বলল, " আমার সাথে দোকানে যাবি? "
সাদিয়া রাজি হলো। . রাস্তায় নেমেই ভাবী বলল, " সাদিয়া,
রাস্তার ওই পাড়ের লাইব্রেরীর দিকে দেখতো। " . সাদিয়া
লাইব্রেরির দিকে তাকিয়ে দেখলো তামিম দাড়িয়ে আছে।
সাদিয়া অবাক হলো। ভাবী বলল, " যা কথা বলে আয়। " . - কেন
যাবো? হয়তো কোন কাজে এসেছে। -- না কাজে আসেনি।
তোকে দেখতে এসেছে। - তুমি কিভাবে জানলে? -- তোর ভাই,
ওকে কয়েকবার দেখেছে। বাসায় তো যেতে পারেনা, তাই
তোকে দেখার জন্য রাস্তায় দাড়িয়ে থাকে। তুই যা, আমি
এখানে দাড়ালাম। . সাদিয়া রাস্তা পাড় হওয়ার জন্য রওনা
দিলো। . (ছয়) . তামিম অবাক হয়ে দেখলো সাদিয়া রাস্তা পাড়
হচ্ছে, একাই। এর মানে তার কাছেই আসছে। তামিম ভয় পেয়ে
গেল! এই মেয়ের যেই রাগ কি করে আল্লাহই জানে। . সাদিয়া
তামিমের মুখোমুখি দাড়ালো। তারপর বলল, . - আপনি এখানে
কি করেন? -- এসেছিলাম এক কাজে। তোমার সাথে দেখা হয়ে
গেল। কি কপাল আমার ... - ভণিতা ছাড়েন। আগেও অনেকবার
এখানে দাড়িয়ে ছিলেন আপনি। আজকে অফিস নাই? -- না।
ছুটি নিয়েছি। . - কেন? -- শরীর টা বেশি ভালো না। - তাহলে
বাসায় শুয়ে না থেকে এখানে এসে দাড়িয়ে আছেন কেন? --
তোমাকে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছিলো! . - আমি কি উড়ে যাচ্ছি! এত
অধৈর্য কেন আপনি? -- তুমি বেশি রেগে গেছো। - রাগবো না
তো কি করবো? বাসার সবাই জেনে গেছে। এখন আমাকে নিয়ে
হাসাহাসি করবে! -- আমি দুখিঃত। চলে যাচ্ছি আর আসবো
না। . তামিম চলে যাচ্ছিলো। সাদিয়া পিছু থেকে ডাক দিলো।
এতক্ষণে তামিমের জন্য মায়া হয়েছে সাদিয়ার। বলল, . -
আমিও দুখিঃত। -- কেন? - অনেক রাগ দেখালাম আপনার সাথে।
-- আরে নাহ, আমারই ভুল ছিলো। - আপনার মোবাইল নাম্বারটা
আমাকে দিবেন? . -- আচ্ছা, নাও। . সাদিয়া মোবাইলে সেভ
করে নিলো। তারপর বলল, . - এখন আসি। -- আমি তোমাকে
রাস্তা পাড় করে দেই? - আচ্ছা। . (ছয়) . সাদিয়া যেমনটি
ভেবেছিলো তেমন কিছু হয়নি। তার বাসায় তাকে নিয়ে
হাসাহাসি হয়নি। ভাইয়া, ভাবীরা বিষয়টা স্বাভাবিক ভাবেই
মেনে নিয়েছে। তবে সেদিন রাতে সাদিয়াকে বড় ভাবী বলল, .
- তুই অনেক ভাগ্যবতী। -- কেন ভাবী? - তুই অনেক ভালো বর
পেয়েছিস। ও এখনই তোকে ভালবেসে ফেলেছে। তুই অনেক সুখী
হবি। . সাদিয়া কিছু বলল না। শুধু মনে মনে বলল, " আল্লাহ
ভাবীর কথা যেনো সত্য হয়। " . মোবাইল নাম্বার নিলেও
সাদিয়া অদৃশ্য কারণে ফোন দেয়ার মতো সাহস যোগার করতে
পারলো না। . কাকতালীয় ব্যাপার ঘটলো সাদিয়ার জন্য।
বিয়ের ডেট পড়লো ভালবাসা দিবসে। . (সাত) . বিয়ের সকল
আনুষ্ঠানিকতা ভালভাবেই শেষ হলো। সময় আসলো সাদিয়াকে
বিদায় দেয়ার। তামিমের বাবার হাতে সাদিয়াক

Comments

Popular posts from this blog

ভালবাসার সঙ্গা:-

ভালোবাসার সংজ্ঞা দিয়েছেন বিভিন্ন দার্শনিক বিভিন্ন ভাবে । ব্যক্তি ভেদে এই সংজ্ঞা বদলে যায় , যেমন বিখ্যাত গণিতবিদ পীথাগোরাস কে আমরা সবাই কম-বেশি চিনি। একবার কোন এক “ ভালোবাসা দিবস” এ এক লোক পীথাগোরাস কে জিজ্ঞেশ করেছিল, আপনার কাছে ভালবাসা’র সংজ্ঞা কী হতে পারে? পীথাগোরাস কোনো কথা না বলে খাতা-কলম নিয়ে বসে পরলো। তারপর কিছুক্ষন পর বলল, আমার কাছে ভালবাসা হচ্ছে ২২০ এবং ২৮৪ এর উৎপাদক ।তখন লোকটি বলল , কীভাবে? পীথাগোরাস বলল , ২২০ এর উৎপাদক হলো ১,২,৪,৫,১০,১১,২০,২২,৪৪,৫৫,১১০ এবং ২৮৪ এর উৎপাদক হলো ১,২,৪,৭১,১৪২ এখন আপনি যদি ২২০ এর উৎপাদক গুলোকে যোগ করেন তাহলে যোগফল হবে ২৮৪ (১+২+৪+৫+১০+১১+২০+২২+৪৪+৫৫+১১০=২৮৪) এবং ২৮৪ এর উৎপাদক গুলোকে যোগ করেন তাহলে যোগফল হবে ২২০ (১+২+৪+৭১+১৪২=২২০) কী! মজার না? আবার দেখুন আমাদের দেশের কবি রফিক আজাদের একটা কবিতা আছে, "ভালোবাসার সংজ্ঞা" ভালোবাসা মানে দুজনের পাগলামি, পরস্পরকে হৃদয়ের কাছে টানা; ভালোবাসা মানে জীবনের ঝুঁকি নেয়া, বিরহ-বালুতে খালিপায়ে হাঁটাহাঁটি; ভালোবাসা মানে একে অপরের প্রতি খুব করে ঝুঁকে থাকা; ভালোবাসা মানে ব্যাপক বৃষ্টি, বৃষ্

আমি নিজের চোখকে বিস্বাস করাতে পারছিলামনা।

আমি নিজের চোখকে বিস্বাস করাতে পারছিলামনা। - রাইসাঃ কি তুমার বিস্বাস হচ্ছেনা,আমি তুমার সামনে?? - আমিঃ তুমাকে কি আমি স্পর্শ করে দেখতে পারি? - রাইসাঃ আমি কি তুমাকে নিষেদ করেছি! - আমি আমার হাতটা রাইসার হাতের উপরে রাখলাম,আমার ভিতরে অজানা একটা ভাল লাগা কাজ করলো,বুকের ভিতরটা মোচর দিয়ে উঠলো! - এরি নাম হয়তো ভালবাসা! - আমি শুধু মুগ্ধ হয়ে রাইসাকে দেখছি।। - কখন যে সময় পেরিয়ে গেলো বুঝতে পারলাম না।।।হঠাৎ রাইসার ডাকে আমার হুশ্ ফিরলো! - রাইসাঃএখন আমাকে যেতে হবে শাকিল। - আমিঃ কেন?আরেকটু থাকোনা! - রাইসাঃ না একটু পরে আযান হবে,আমি আর থাকতে পারবনা, দিনের আলো আমি একদম সহ্য করতে পারিনা।আমি যাচ্ছি ভাল থেকো। রাইসা চলে গেলো। - ঘরটা আগের মতো আবার অন্ধকার হয়ে গেলো।শুধু একটা মিষ্টি গন্ধ পাচ্ছি! - - তার পর বেশ কিছুদিন কেঁটে গেলো,রাইসা আমাকে কল করছে না,দেখা করতেও আসছেনা।। - ভাবলাম ও হয়তো আমাকে ভুলে গেছে! মনের অজান্তেই কখন রাইসাকে আমি ভালবেসে ফেলেছি,জানিনা। - খুব কষ্ট হচ্ছিলো! রাইসাকে ছাড়া আর কোন কিছু ভাবতে পারছিনা আমি। হোক না সে অন্য কোন জাতি!আমি তু তাকে ভালবাসি আর ভালবাসা
ছেলেরা মাসে ৭০০০ টাকা বেতনে চাকরী করে!বাবার জন্য ১০০০,!মা'র জন্য ১০০০,!বউয়ের জন্য ১০০০ টাকা!ফেমিলি চালানোর ২০০০ বিকাশ করেও! দিব্যি ২০০০ টাকায় মাস চালিয়ে নিতেজানে। মাসে ৭০০০ টাকা মাইনের ছেলেটা বেতন পেয়ে! বউয়ের কাছে ফোনে বলতে জানে " ওগো তোমার জন্য কিপাঠাবো? " সামান্য বেতন পাওয়া যে ছেলেটা নিজের পুরনোজুতো বদলাবে বলে ঠিক করেছে , সেই ছেলেটাইমার্কেটে গিয়ে বউ আর বাবুর জন্য জুতো কিনে নিজের ছেঁড়াজুতো সেলাই করেমাসের পর মাস পড়তেজানে। উপোস পেটে কাজে গিয়েও মাকে বলতে জানে'আমি মাছ দিয়ে ভাত খেয়েছি তোমরা খেয়েছোতো', ১০৩ ডিগ্রী জ্বর নিয়ে কাজে গিয়েও বাবাকে বলে 'আমি অনেক ভাল আছি তোমরা ভাল আছোতো? নিজের পকেট ফাঁকা জেনেও বউকে বলে ' একটু ধৈর্য্য ধরো সামনের মাসে তোমার জন্য একজোড়া বালা কিনেদিব।