Skip to main content

ভালবাসার গল্প





ঘুমাতে চাইলেই যে সুন্দর ঘুম হবে, এমনটা নাও হতে পারে। স্মৃতি মানুষের ঘুম কেরে
নিতে একটুও ভাবে না। আজ আমাদের বাসর রাত। আমি খাটে শুয়ে আছি। আর আমার
বৌ খাটের নিচে! খাটের ঠিক নিচে না। পাশে। আপনারা নিশ্চয়ই অবাক হচ্ছেন?
অথবা কেউ হাসলেও পারেন। আমাদের বিয়েটা পারিবারিক ভাবেই হয়েছে। বিয়ের
আগে আমাদেরকে আলাদা ভাবে কথা বলতে দেয়া হয়েছিলো। তখন আমি তাকে
একটাই প্রশ্ন করে ছিলাম। 'আপনার কিছু বলার আছে?' সে বলেছিলো তার কিছু বলার
নেই। তাই আমিও কিছুই বলিনি। কিন্তু বাসর রাতে ঘরে আসার আগে আমাকে অনেক
বার ভাবিয়েছে। ভেতরে আসব? কি আসব না? অনেক ক্ষন দড়জার পাশে নিরবে
দাড়িয়ে ছিলাম। এই সময় স্মৃতিকে খুব মনে পরেছিলো।
স্মৃতি! তারবিন তাবিয়া স্মৃতি। চার বছরের সম্পর্ক ছিলো। যখন দ্বিতীয় বর্ষে পড়ি,
তখন তার বিয়ে হয়ে যায়। আমরা পালিয়ে বিয়ে করতে পারিনি। প্রথমত আমরা দুজনেই
পড়ালেখা করতাম। আর দ্বিতীয়ত আমরা কেউই পরিবারকে কষ্ট দিতে পারিনি।
রিলেশনের কথা আমাদের পরিবারকে জানাতে ওর পরিবার রাজি হয়নি। কষ্টের
মানেটা তখন বুঝতে পেরেছিলাম। স্মৃতি এখন স্মৃতি হয়েই আছে। ওর স্বামির সাথে
বিদেশে থাকে। গত বছর একবার এসেছিলো। ওর একটা ছেলে আছে। দেখতে ওর মতই
কিউট। আমার সাথে যখন পরিচয় করিয়ে দিয়ে ছিলো তখন মামা হিসেবে পরিচয়
করিয়ে দিয়ে ছিলো। যদিও ছেলেটা আমাদেরও হতে পারত।
আমার বৌয়ের নাম যারিন। যারিন সুববাহ। ওই সময় কাঁদছিলো। আচ্ছা, স্মৃতিও কি
আমার কথা ভেবে খুব কেদেছিলো?? স্মৃতি এখন অন্যের! ভাবতেই মাথাটা খুব গরম
হয়ে যায়। আমার স্মৃতি আজ অন্যের!
আর না দাড়িয়ে ভেতরে ডুকলাম। আমার জন্য অন্য কাউকে কষ্ট পেতে হবে এটা ঠিক
না। আমার কষ্টের সাথে যারিনের কোন যোগাযোগ নেই। তেমনি যারিনকে কষ্ট
দেয়ার অধিকার আমার নেই। আমি খাটের কাছে যেতেই যারিন বলল
- আপনি আমার কাছেও আসবেন না। আর স্পর্শ করার চেষ্টাও করবেন না। সুধু বাবার
দিকে তাকিয়ে বিয়েটা আটকাতে পারিনি।
- বিয়ের আগে আমায় বললে না কেন?
-তহলে বিয়েটা নাও হতে পারত। আর বাবা কষ্ট পেত।
-এখানে আমার দোশটা কি? আমি কেন কষ্ট পাব?
- আমি কিছু জানি না। আপনি খাটের কাছেও আসবেন না। তাহলে আমি নিজেকে
শেষ করে দেব।
-(কথাটা শুনেই মাথাটা গরম হয়ে গেলো। একটা চর মেরে দিলাম।) এগুলো বিয়ের আগে
মনে ছিলো না? এখন ঝামেলা করছো কেনো? নিজেকে শেষ করে দিলে তখন বাবা
কষ্ট পাবে না?
-কিছু না বলে শুধু কাদছে।
-(মাথাটা আরো গরম হয়ে গেলো।) আমি বললাম, আমি এখন ঘুমাব। আমার সাথে ঘুমাতে
অসুবিধা হলে নিচে বিছানা করে ঘুমাও। আমি খাটে ঘুমাব।
-যারিন খাট থেকে নামল। আমি আলমারি থেকে একটা চাদর আর একটা কাথা বের
করে দিলাম। সাথে একটা বালিশ দিলাম।
আমি শুয়ে পরলাম। সেও একটু পরে নিচে বিছানা করে শুয়ে পরলো। একটু পর পর টিসু
দিয়ে নাক চোখ মুছছে। হয়তো কাদছে। চরটা মার ঠিক হয়নি। কিন্তু নিজেকে শেষ
করে দেয়ার মত বোকামির কথা বলায় মাথাটা গরম হয়ে গেছিলো। যাই হোক। শুয়ে
শুয়ে অনে কিছু ভাবছিলাম। হঠাৎ আজানের শব্দ শুনে উঠে গোসল করে নামাযের জন্য
তৈরি হলাম। আর যারিন ঘুমাচ্ছে। তাই গ্লাসের পানি ওর সরীরে ঢেলে দিলাম।
উঠে যখন আমার দিকে রিনা খান লুক নিয়ে তাকালো, আমি তো ভয়ই পেলাম। তবুও
বললাম, আমাদের ভেতরের ঝামেলাটা যেন রুমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। বাহিরের
কেউ যেন বুঝতে না পারে। এতে মা-বাবা কষ্ট পাবে। গোসল করে নামায পরে নাও।
কিছু বললো না। শুধু লাল চোখে করুন দুষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। আমি কথা না বারিয়ে
চলে এলাম।
সারা দিন ভালোই গেলো। সবার সাথেই হেসে হেসে কথা বলত। সুধু আমার সাথে বলত
না। রাতে নিচে বিছানা করে শুয়ে পরলো। মাঝরাতে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
কোনো একটা শব্দ হচ্ছে। যারিন শব্দ করছে। হয়তো অসুস্থ। আমি কয়েটা ডাক দিলাম।
কোন সারা নেই। নিচে নেমে কপালে হাত রাখলাম।
খুব গরম। মানে জ্বর অনেক বেশি। কি করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। হয়তো আমি নিচে
শুয়ে ওকে খাটে শুতে দিলে এমনটা হতো না। আবারো কয়েকটা ডাক দিলাম। তবুও
সারা নেই। শেষে ওকে কোলে তুলে খাটে ওঠালাম। মাথায় পানি দিলাম। শরীরের
যতটা সম্ভব কাপর ভিজিয়ে মুছে দিলাম। একটু পর পরে মোছাতে থাকলাম। শেষ রাতে
জ্বর একটু কমে আসলো। তখন চোখ খুললো। সুধু আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো। আমি সুধু
সরি বললাম। আর কিছু বলতে পারলাম না। তখন যারিনের চোখে পানি দেখেছিলাম।
আমি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলাম। ও আবার ঘুমিয়ে পরলো। আমি আর গুমালাম
না। ওর পাশেই ছিলাম।
পরে সারা দিন যারিনের জ্বর অনেকটাই কম ছিলো। তবে একেবারে সেরে যায় নি।
রাতে ঘুমানোর সময় আবারো নিচে বিছানা করতে নিলো। আমি বললাম,
-এভাবে কি জীবন চলতে পারে?
-কিছু বললো না।
-জীবন কি কারো জন্য থেমে থাকতে পারে?
-এখনো নিরম
-আমরা কি নিজেদের মত করে বাচতে পারি না? তোমার হয়তো কিছু অতিত আছে।
আমারো আছে। কিন্তু অতিতের জন্য জীবন থামিয়ে রাখা যায় না। পরিবারের জন্য
যে ভাবে আমরা বিয়ে করেছি, তেমন ভাবেই আমাদের জীবন চালাতে হবে। অতিতের
জন্য বর্তমার আর ভবিষ্যত নষ্ট করে কি লাভ? এখানে তো আমাদের কারোই দোশ নেই।
তবে আমরা কেন ভোগ করব?? আর তারা তো আমাদের জন্য থেমে নেই! আমরা কি
পারি না সব কিছু নতুন করে শুর করতে??
-করুন ভাবে তাকিয়ে থাকলো। কিছু বলল না।
-আমি বললাম, প্লিজ....
তার পরেও কিছু বলল না। তবে নিচে বিছান ঠিক করলো না। খাটের উপরেই এক পাশে
শুয়ে পরলো।
শুয়ে শুয়ে করুন দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো। কি ছিলো ওই চাওয়ার মাঝে
যানি না। তবে আমি অনেক কিছু দেখেছিলাম। আমিও ওর মাথার পাশে বসলাম। আর
একটি হাত ওর মাথায় বুলিয়ে দিলাম। ও আমার অন্য হাতটা নিজের দুই হাতে আবদ্ধ
করে নিলো। আর চোখ বন্ধ করলো। কিছু কথা না বললেও বুঝে নিতে হয়।।

Comments

Popular posts from this blog

ভালবাসার সঙ্গা:-

ভালোবাসার সংজ্ঞা দিয়েছেন বিভিন্ন দার্শনিক বিভিন্ন ভাবে । ব্যক্তি ভেদে এই সংজ্ঞা বদলে যায় , যেমন বিখ্যাত গণিতবিদ পীথাগোরাস কে আমরা সবাই কম-বেশি চিনি। একবার কোন এক “ ভালোবাসা দিবস” এ এক লোক পীথাগোরাস কে জিজ্ঞেশ করেছিল, আপনার কাছে ভালবাসা’র সংজ্ঞা কী হতে পারে? পীথাগোরাস কোনো কথা না বলে খাতা-কলম নিয়ে বসে পরলো। তারপর কিছুক্ষন পর বলল, আমার কাছে ভালবাসা হচ্ছে ২২০ এবং ২৮৪ এর উৎপাদক ।তখন লোকটি বলল , কীভাবে? পীথাগোরাস বলল , ২২০ এর উৎপাদক হলো ১,২,৪,৫,১০,১১,২০,২২,৪৪,৫৫,১১০ এবং ২৮৪ এর উৎপাদক হলো ১,২,৪,৭১,১৪২ এখন আপনি যদি ২২০ এর উৎপাদক গুলোকে যোগ করেন তাহলে যোগফল হবে ২৮৪ (১+২+৪+৫+১০+১১+২০+২২+৪৪+৫৫+১১০=২৮৪) এবং ২৮৪ এর উৎপাদক গুলোকে যোগ করেন তাহলে যোগফল হবে ২২০ (১+২+৪+৭১+১৪২=২২০) কী! মজার না? আবার দেখুন আমাদের দেশের কবি রফিক আজাদের একটা কবিতা আছে, "ভালোবাসার সংজ্ঞা" ভালোবাসা মানে দুজনের পাগলামি, পরস্পরকে হৃদয়ের কাছে টানা; ভালোবাসা মানে জীবনের ঝুঁকি নেয়া, বিরহ-বালুতে খালিপায়ে হাঁটাহাঁটি; ভালোবাসা মানে একে অপরের প্রতি খুব করে ঝুঁকে থাকা; ভালোবাসা মানে ব্যাপক বৃষ্টি, বৃষ্

আমি নিজের চোখকে বিস্বাস করাতে পারছিলামনা।

আমি নিজের চোখকে বিস্বাস করাতে পারছিলামনা। - রাইসাঃ কি তুমার বিস্বাস হচ্ছেনা,আমি তুমার সামনে?? - আমিঃ তুমাকে কি আমি স্পর্শ করে দেখতে পারি? - রাইসাঃ আমি কি তুমাকে নিষেদ করেছি! - আমি আমার হাতটা রাইসার হাতের উপরে রাখলাম,আমার ভিতরে অজানা একটা ভাল লাগা কাজ করলো,বুকের ভিতরটা মোচর দিয়ে উঠলো! - এরি নাম হয়তো ভালবাসা! - আমি শুধু মুগ্ধ হয়ে রাইসাকে দেখছি।। - কখন যে সময় পেরিয়ে গেলো বুঝতে পারলাম না।।।হঠাৎ রাইসার ডাকে আমার হুশ্ ফিরলো! - রাইসাঃএখন আমাকে যেতে হবে শাকিল। - আমিঃ কেন?আরেকটু থাকোনা! - রাইসাঃ না একটু পরে আযান হবে,আমি আর থাকতে পারবনা, দিনের আলো আমি একদম সহ্য করতে পারিনা।আমি যাচ্ছি ভাল থেকো। রাইসা চলে গেলো। - ঘরটা আগের মতো আবার অন্ধকার হয়ে গেলো।শুধু একটা মিষ্টি গন্ধ পাচ্ছি! - - তার পর বেশ কিছুদিন কেঁটে গেলো,রাইসা আমাকে কল করছে না,দেখা করতেও আসছেনা।। - ভাবলাম ও হয়তো আমাকে ভুলে গেছে! মনের অজান্তেই কখন রাইসাকে আমি ভালবেসে ফেলেছি,জানিনা। - খুব কষ্ট হচ্ছিলো! রাইসাকে ছাড়া আর কোন কিছু ভাবতে পারছিনা আমি। হোক না সে অন্য কোন জাতি!আমি তু তাকে ভালবাসি আর ভালবাসা
ছেলেরা মাসে ৭০০০ টাকা বেতনে চাকরী করে!বাবার জন্য ১০০০,!মা'র জন্য ১০০০,!বউয়ের জন্য ১০০০ টাকা!ফেমিলি চালানোর ২০০০ বিকাশ করেও! দিব্যি ২০০০ টাকায় মাস চালিয়ে নিতেজানে। মাসে ৭০০০ টাকা মাইনের ছেলেটা বেতন পেয়ে! বউয়ের কাছে ফোনে বলতে জানে " ওগো তোমার জন্য কিপাঠাবো? " সামান্য বেতন পাওয়া যে ছেলেটা নিজের পুরনোজুতো বদলাবে বলে ঠিক করেছে , সেই ছেলেটাইমার্কেটে গিয়ে বউ আর বাবুর জন্য জুতো কিনে নিজের ছেঁড়াজুতো সেলাই করেমাসের পর মাস পড়তেজানে। উপোস পেটে কাজে গিয়েও মাকে বলতে জানে'আমি মাছ দিয়ে ভাত খেয়েছি তোমরা খেয়েছোতো', ১০৩ ডিগ্রী জ্বর নিয়ে কাজে গিয়েও বাবাকে বলে 'আমি অনেক ভাল আছি তোমরা ভাল আছোতো? নিজের পকেট ফাঁকা জেনেও বউকে বলে ' একটু ধৈর্য্য ধরো সামনের মাসে তোমার জন্য একজোড়া বালা কিনেদিব।