Skip to main content

বিয়ের পরে।

...বিয়ের পর
-হাসছেন কেন এভাবে?আমাকে কি জোকারের মত লাগছে? -
না,না,তা কেন লাগবে? -তাহলে হাসছেন কেন? -আপনি নখ
খাচ্ছেন তো তাই দেখে মজা লাগছে।নখ খাচ্ছেন কেন?খুব
বাজে অভ্যাস। -নখ খাচ্ছি না,কামড়াচ্ছি।আর আমি আপনার
কাছে জ্ঞান চাচ্ছি না।যে কাজ করতে এসেছি দয়া করে
সেটা করে চলে যাই। -তা কি করতে এসেছি আমরা ম্যাডাম? -
দেখা করতে এসেছি,কথা বলতে এসেছি,স্যার। -হুম।দেখা তো
হয়েছেই,কথা তো হচ্ছে। -শুনুন,সোজাসুজি বলুন আমাকে আপনার
পছন্দ হয়েছে? -আগে আপনি বলুন। -প্রশ্ন আগে আমি করেছি
তাই আগে আপনি উত্তর দিবেন। -তেমন একটা ভালো লাগে
নি,মোটামুটি। -চমৎকার।আপনাকেও আমার ভালো লাগে
নি,তাহলে বিয়ে ক্যান্সেল। -দাঁড়ান দাঁড়ান,আমি বলেছি
তেমন একটা ভালো লাগে নি,একটু একটু ভালো লেগেছে।আর
বিয়ের পরে আশা করি সম্পূর্ণই ভালো লেগে যাবে,তাই বিয়ে
ক্যান্সেল করার প্রশ্নই ওঠে না।আমি আপনাকেই বিয়ে করছি। -
আজব পাবলিক তো আপনি!আমি আপনাকে বিয়ে করবো না।
আপনার মাথা নষ্ট। -বিয়ে তো ঠিক হয়েই গেছে,এটা শুধু
ফর্মালিটি।সো,নিরুপমা,বাসায় যেয়ে বিয়ের জন্য প্রস্তুত
হোন। -আমার নাম শুধু নিরু। -ও নিরুপমা,করিয়ো ক্ষমা।
হাহাহাহাহাহা......।টাটা নিরুপমা।দেখা হবে বিয়ের
কাঠগড়ায়!
মা-বাবা এই ছেলে ঠিক করেছে আমার জন্য?ধরে-বেঁধে
আমাকে পানিতে ফেলে দিচ্ছে কেন?বাবা-মা নাকি সবসময়
ছেলে-মেয়ের মঙ্গল চায়!আমার বাবা-মা তো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ
বাবা-মা তাহলে তারা এমন কেন করছে?এ কার সাথে আমার
বিয়ে দিচ্ছে?সারাজীবন গুড গার্ল হয়ে থাকার এই পুরষ্কার!এর
চেয়ে তো সিমির মত প্রেম করা ভালো ছিল।
-কিরে,কথা হল অয়নের সাথে? -হুম।মা,এই ছেলের সাথে আমার
বিয়ে দিও না।ছেলেটা পাগল।তোমরা তোমাদের একমাত্র
মেয়ের বিয়ে একটা পাগলের সাথে দিবা,মা? -তুই সত্যি করে
বল তো,তোর কাউকে পছন্দ,ভালোবাসিস কাউকে?আমি
বারবার জিজ্ঞেস করেছি কিন্তু।বল...। -না,মা।কেউ নেই।তুমি
ভালোমতই জানো। -তাহলে কি সমস্যা?অয়ন ভালো ছেলে,খুব
ভালো।তোর বিয়ে আমরা বুঝ-শুনেই দিচ্ছি রে মা।ভরসা করিস।
অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ করার সুবিধা আছে।জামাই ঝামেলাজনক
হলে সব দোষ বাবা-মা'র।তোমরা দেখে-শুনে বিয়ে
দিয়েছো,তোমরা জানো!মনের মধ্যে খুঁতখুঁত হয়েই যাচ্ছে,ভুল
করছি কি?এসব সাত-পাঁচ ভাবতে ভাবতেই আমার বিয়ের দিন
চলে এল আর হুড়মুড় করে বিয়েটা হয়েও গেল।কিছু বুঝে ওঠার
আগেই নিজেকে আবিষ্কার করলাম ঘোমটা পড়া বৌ হিসেবে
এক অচেনা-অজানা বাড়িতে।মা বলেছিল আমার শাশুড়ি মা
বেঁচে নেই,তাই এই বাড়িতে আমার শশুর আর অয়ন যে আমার বর
সে ছাড়া আর কেউ নেই।আমার ফুফু শাশুড়ি আমাকে সব বুঝিয়ে
দিচ্ছে আর আমি কলের পুতুলের মত মাথা নাড়ছি,ভীষন
এলোমেলো লাগছে নিজেকে,অন্য কেউ মনে হচ্ছে নিজেকে!
একদম অন্য কেউ।আমি এখন কোন বাড়ির বৌ।
সারাদিন আমার অফুরন্ত সময়।তিনজনের ছোট্ট এই সংসারে
আমার খুব ভালো লাগে।আমার বাবা ছাড়া অন্য কাউকে কখনো
বাবা বলবো স্বপ্নেও ভাবি নি,অথচ এই অসম্ভব ভালো
মানুষটাকে আমি বাবা ডাকি,ভীষন ভালো লাগে।বাবা যখন
বলেন,"নিরু মা,আমার গোসলের গরম পানিটা দাও তো,অথবা
বাহ,মামনি আজকের চা'টা তো অসাধারন হয়েছে।" এই কথায়
আমার চোখে পানি চলে আসে!এত স্নেহ-মমতা নিয়ে উনি
আমাকে কিভাবে ডাকেন!ও আচ্ছা!আমার বরমশাইয়ের কথাই
কিছু বলা হয় নি দেখি!এই ছেলেটা সম্পর্কে আমি একেকবার
একেকভাবে মত দেই।মাঝে মাঝে মনে হয়, এ আসলেই
পাগল,নয়তো কোন ছেলে তার বাবার সামনে চিৎকার করে তার
সদ্য বিবাহিত বৌকে "ও,নিরুপমা গো,কি করছো গো নিরুমনি?"
এভাবে বলে?লজ্জায় আমার হাত-পা শিরশির করে!হঠাৎ মনে
হয় আমি যে এই বাড়িতে একজন আছি তার খেয়ালই নেই,হুট করে
ছুটির দিন আমাকে ফেলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে চলে
গেল।তখন মনে হয় আসলেই আমাকে সে তেমন একটা পছন্দ করে
না।আবার এই আমিই যখন রান্না করতে যেয়ে হাত পুড়াই তখন
এমনভাবে আমার খেয়াল রাখে যেন নিজেরই হাত পুড়ে গেছে!
তখন মনে হয় হয়তো আমাকে ভালোবাসে!আমি বুঝি না
তাকে,যাই ভাবি সব এলোমেলো লাগে তার সম্পর্কে।কিন্তু
আমি এটা নিশ্চিত যে আমি তার প্রেমে ভালোমতই পড়েছি।
-অয়ন,শুনো। -বলো।আমি কান পেতেই আছি নিরুপমার কথা
শোনার জন্য। -ফাইজলামি করো না।সিরিয়াস কথা বলবো। -
ওকে।আমিও সিরিয়াস,একদম সিরিয়াস। -তুমি কি এখনও
আমাকে একটু একটু পছন্দ করো? -আর তুমি কি আমাকে পছন্দ
করোই না? -আগে আমি প্রশ্ন করেছি তাই উত্তর আগে তুমি
দিবা। -আমি তো তোমাকে আগে থেকেই পুরোটা
ভালোবাসি,মানে অনেক পছন্দ করি নিরুপমা। -তাহলে সেদিন
বললে যে তেমন ভালো লাগে নি আমাকে! -যাতে তোমার
দেমাগ না বেড়ে যায়,কোন ছেলে মেয়েটাকে পছন্দ করে
জানলেই মেয়েটার আর দেমাগে মাটিতে পা পড়ে না,আমার
মনে হচ্ছিল আমাকে তোমার ভালো লাগে নি তাই তুমি যেন
দেমাগ নিতে না পারো তাই ওরকম বলেছিলাম নিরুপমা,করিয়ো
ক্ষমা!এবার তুমি বলো! -আমি তোমার মত মাথা খারাপ লোকের
প্রেমে কেন পড়ে গেলাম এই জন্য আমি শঙ্কিত!তুমি খুব খারাপ
ধরনের পাগল,তোমাকে কেন ভালবেসে ফেলেছি আমি? -কারন
আমি খুব ভালো ছেলে,আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি,তাই
কিছু ভালো তো তোমাকে বাসতেই হবে।আর একবার নখ
কামড়াইলে তোমার হাতের উপর বাড়ি দিব একটা!সারাদিন নখ
কামড়ানো। -ভাগো......।আসছে বাড়ি দিতে!খবরদার জ্ঞান
দিবা না,তাইলে তোমাকেই বাড়ির উপর রাখব!
আসলেই ঠিকঠাক মিলে গেলে অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ তো খুব
একটা খারাপ না।বিয়ে'র পরে প্রেম করায় অন্যরকম
ভালোলাগা।

Comments

Popular posts from this blog

ভালবাসার সঙ্গা:-

ভালোবাসার সংজ্ঞা দিয়েছেন বিভিন্ন দার্শনিক বিভিন্ন ভাবে । ব্যক্তি ভেদে এই সংজ্ঞা বদলে যায় , যেমন বিখ্যাত গণিতবিদ পীথাগোরাস কে আমরা সবাই কম-বেশি চিনি। একবার কোন এক “ ভালোবাসা দিবস” এ এক লোক পীথাগোরাস কে জিজ্ঞেশ করেছিল, আপনার কাছে ভালবাসা’র সংজ্ঞা কী হতে পারে? পীথাগোরাস কোনো কথা না বলে খাতা-কলম নিয়ে বসে পরলো। তারপর কিছুক্ষন পর বলল, আমার কাছে ভালবাসা হচ্ছে ২২০ এবং ২৮৪ এর উৎপাদক ।তখন লোকটি বলল , কীভাবে? পীথাগোরাস বলল , ২২০ এর উৎপাদক হলো ১,২,৪,৫,১০,১১,২০,২২,৪৪,৫৫,১১০ এবং ২৮৪ এর উৎপাদক হলো ১,২,৪,৭১,১৪২ এখন আপনি যদি ২২০ এর উৎপাদক গুলোকে যোগ করেন তাহলে যোগফল হবে ২৮৪ (১+২+৪+৫+১০+১১+২০+২২+৪৪+৫৫+১১০=২৮৪) এবং ২৮৪ এর উৎপাদক গুলোকে যোগ করেন তাহলে যোগফল হবে ২২০ (১+২+৪+৭১+১৪২=২২০) কী! মজার না? আবার দেখুন আমাদের দেশের কবি রফিক আজাদের একটা কবিতা আছে, "ভালোবাসার সংজ্ঞা" ভালোবাসা মানে দুজনের পাগলামি, পরস্পরকে হৃদয়ের কাছে টানা; ভালোবাসা মানে জীবনের ঝুঁকি নেয়া, বিরহ-বালুতে খালিপায়ে হাঁটাহাঁটি; ভালোবাসা মানে একে অপরের প্রতি খুব করে ঝুঁকে থাকা; ভালোবাসা মানে ব্যাপক বৃষ্টি, বৃষ্

আমি নিজের চোখকে বিস্বাস করাতে পারছিলামনা।

আমি নিজের চোখকে বিস্বাস করাতে পারছিলামনা। - রাইসাঃ কি তুমার বিস্বাস হচ্ছেনা,আমি তুমার সামনে?? - আমিঃ তুমাকে কি আমি স্পর্শ করে দেখতে পারি? - রাইসাঃ আমি কি তুমাকে নিষেদ করেছি! - আমি আমার হাতটা রাইসার হাতের উপরে রাখলাম,আমার ভিতরে অজানা একটা ভাল লাগা কাজ করলো,বুকের ভিতরটা মোচর দিয়ে উঠলো! - এরি নাম হয়তো ভালবাসা! - আমি শুধু মুগ্ধ হয়ে রাইসাকে দেখছি।। - কখন যে সময় পেরিয়ে গেলো বুঝতে পারলাম না।।।হঠাৎ রাইসার ডাকে আমার হুশ্ ফিরলো! - রাইসাঃএখন আমাকে যেতে হবে শাকিল। - আমিঃ কেন?আরেকটু থাকোনা! - রাইসাঃ না একটু পরে আযান হবে,আমি আর থাকতে পারবনা, দিনের আলো আমি একদম সহ্য করতে পারিনা।আমি যাচ্ছি ভাল থেকো। রাইসা চলে গেলো। - ঘরটা আগের মতো আবার অন্ধকার হয়ে গেলো।শুধু একটা মিষ্টি গন্ধ পাচ্ছি! - - তার পর বেশ কিছুদিন কেঁটে গেলো,রাইসা আমাকে কল করছে না,দেখা করতেও আসছেনা।। - ভাবলাম ও হয়তো আমাকে ভুলে গেছে! মনের অজান্তেই কখন রাইসাকে আমি ভালবেসে ফেলেছি,জানিনা। - খুব কষ্ট হচ্ছিলো! রাইসাকে ছাড়া আর কোন কিছু ভাবতে পারছিনা আমি। হোক না সে অন্য কোন জাতি!আমি তু তাকে ভালবাসি আর ভালবাসা
ছেলেরা মাসে ৭০০০ টাকা বেতনে চাকরী করে!বাবার জন্য ১০০০,!মা'র জন্য ১০০০,!বউয়ের জন্য ১০০০ টাকা!ফেমিলি চালানোর ২০০০ বিকাশ করেও! দিব্যি ২০০০ টাকায় মাস চালিয়ে নিতেজানে। মাসে ৭০০০ টাকা মাইনের ছেলেটা বেতন পেয়ে! বউয়ের কাছে ফোনে বলতে জানে " ওগো তোমার জন্য কিপাঠাবো? " সামান্য বেতন পাওয়া যে ছেলেটা নিজের পুরনোজুতো বদলাবে বলে ঠিক করেছে , সেই ছেলেটাইমার্কেটে গিয়ে বউ আর বাবুর জন্য জুতো কিনে নিজের ছেঁড়াজুতো সেলাই করেমাসের পর মাস পড়তেজানে। উপোস পেটে কাজে গিয়েও মাকে বলতে জানে'আমি মাছ দিয়ে ভাত খেয়েছি তোমরা খেয়েছোতো', ১০৩ ডিগ্রী জ্বর নিয়ে কাজে গিয়েও বাবাকে বলে 'আমি অনেক ভাল আছি তোমরা ভাল আছোতো? নিজের পকেট ফাঁকা জেনেও বউকে বলে ' একটু ধৈর্য্য ধরো সামনের মাসে তোমার জন্য একজোড়া বালা কিনেদিব।